অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর অরুনিমা রিসোর্ট
প্রকাশিত : ১২:৩২, ২ ডিসেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১২:৩৩, ২ ডিসেম্বর ২০২২
শীতের আগমনে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার পানিপাড়া গ্রামে প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়া উঠা অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব এখন অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত।
রিসোর্টে অবস্থিত সবুজ গাছ-গাছালিতে সারা বছরই বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি বসতে দেখা যায়। তবে শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অতিথি পাখির সংখ্যা অন্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুন বেড়ে যায়।
এখানে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি আপন মনে ঘুরাঘুরি করে থাকে। আমাদের দেশের মানুষের মতো পাখিরাও অতিথি পরায়ন। শীতের শুরুতে বিদেশি পাখিরা রিসোর্টে আসতে শুরু করলে দেশি প্রজাতির পাখিরা তাদেরকে জায়গা ছেড়ে দেয়।
রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারির কারণে পাখি শিকার বা পাখিদের প্রতি বিরুপ আচরণ বন্ধ থাকায় এ রিসোর্টের গাছপালা এখন পাখিদের দখলে। খাদ্যের সন্ধানে সকালে বেরিয়ে পড়া পাখিগুলো সন্ধ্যা লাগার ঘন্টা দু’য়েক আগে থেকে ডানা মেলে এখানে আসতে থাকে।
আকাশে ডানা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ছুটে এসে রিসোর্টের ভিতরকার গাছপালার ডালে বসার দৃশ্য অপরুপ। শীত মৌসুমের বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ রিসোর্টের গাছে পাখির দৃশ্য ও পাখির কিচির মিচির শব্দ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত দর্শকদের মোহিত করে।
সন্ধ্যা লাগার আগ মূহুর্তে গাছের ডালে পাখি ছাড়া আর কিছুই দেখা যায় না। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবকে এখন পাখির মেলাস্থল হিসেবে অভিহিত করেছেন।
পাখি ও প্রকৃতি প্রেমিক অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সদস্য খবির উদ্দিন আহমেদ বাসসকে জানান, পর্যটকদের মনের খোরাক মেটাতে ও নির্মল আনন্দদানে প্রায় ৫০ একর জমি নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এ রিসোর্ট ও গলফ ক্লাবটি।
শহরের অধিবাসী তথা কর্মব্যস্ত মানুষ বিশেষ করে মহিলা ও শিশুরা এখানে ঘুরতে এসে প্রাকৃতিক পরিবেশের সবটুকু আনন্দ পেয়ে থাকেন। এ রিসোর্টে রয়েছে বড়-বড় কয়েকটি পুকুর। পুকুর ভরা রয়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। পুকুর বা জলাশয়ে ভেসে থাকা বিশাল আকৃতির মাছগুলোও পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
পরিবারের সদস্য কিংবা স্বজনদের নিয়ে দীঘি আকৃতির পুকুরের এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর জন্য জন্য রয়েছে সাম্পানের মতো তৈরি নৌকা। রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে মৎস্য শিকারীরা মাঝে-মধ্যে মাছ শিকার করে থাকেন এখানকার পুকুরে। রয়েছে সুইমিং পুল ও ঝুলন্ত সেতু। পর্যটকদের ক্লান্তি দূর করতে নৈসর্গিক রিসোর্টের বিভিন্ন স্থানে লাগানো হয়েছে মনোমুগ্ধকর ফুলের গাছ ও ফলদ বৃক্ষ। গোলাপ,বেলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের এবং বিভিন্ন প্রজাতির ফলের সুরভিত ঘ্রাণ রিসোর্টের পরিমন্ডল ছাড়িয়ে আশপাশের গ্রামে প্রত্যহ প্রবেশ করছে।
দূর-দূরান্তের পর্যটকদের জন্য রয়েছে রিসোর্ট অভ্যন্তরে খাওয়া ও রাতে আবাসনের ব্যবস্থা। দিনরাত সার্বক্ষণিক রয়েছে জোরদার নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সরকারি দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও সব শ্রেণী পেশার মানুষকে আনন্দ-বিনোদন দিতে শহুরে জীবন ছেড়ে বেশিরভাগ সময় এখানে কাটান তিনি।তার রিসোর্ট ও গলফ ক্লাবে এসে মানুষ আনন্দ পেলে তিনিও আনন্দ পান বলে জানান সদা হাস্যোজ্জ্বল অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের কর্ণধার খবির উদ্দিন আহমেদ।
অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইরফান আহমেদ জানান, পাখির অভয়াশ্রম গড়ে পাখি সুরক্ষায় অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব কর্তৃপক্ষের ভূয়শী প্রশংসা করে থাকেন এখানে আগতরা। এখানকার এসএম সুলতান লাউন্স রুম ও চিত্র কনভেনশন হল রুমে মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের সভা, সেমিনার ও পার্টি আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের মধ্যে একমাত্র বেসরকারিভাবে স্থাপিত অরুনিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবে গলফ খেলারও সুব্যবস্থা রয়েছে বলে তিনি জানান।
সূত্র: বাসস
এসবি/
আরও পড়ুন